বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০১১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থী সংখ্যার দিক থেকে বর্তমানে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্ম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। ১২টি বৃহত্তর জেলায় ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা তৎকালীন সরকার গ্রহণ করে। প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়। এই ৬টির মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি ছিল একটি। ১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে প্রকল্প পরিচালক নিযুক্ত করে গোপালগঞ্জে পাঠানো হয়। প্রকল্প পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচন, জমি অধিগ্রহণ (প্রায় ৫৫একর) এবং জমি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেন। ইতোমধ্যে ২০০১ সালের ৮ জুলাই মহান জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণীত হয়। ২০০১ সালের ১৩ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে নিয়োগের সুপারিশ করেন এবং রাষ্ট্রপতি ১৯ জুলাই ২০০১ উক্ত নিয়োগ অনুমোদন করেন।
২০০২ সালের ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানের নিয়োগ বাতিল করে এবং তাকে তার পূর্বতন প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। ২০০৯ সালের নভেম্বরে স্থগিত প্রকল্পটি পুনর্জীবিত হয় এবং ২০১০ সালের ৫ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে আবারও প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করে এবং ২০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ আইন-২০০১ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসআরও জারী করে।
পরবর্তীতে ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে পুনরায় ৪ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মেয়াদ শেষ করেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দিনকে ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করে। কিন্তু ২০১৯ সালে ডঃ নাসিরুদ্দীনের বিপক্ষে নারী কেলেঙ্কারী, ক্ষমতার অপব্যবহার সহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাত্রছাত্রীদের দুর্বার আন্দোলনের কারণে অপসারণ করা হয়। এরপর খন্ডকালীন উপাচার্য হিসেবে ডঃ মো শাহজাহানকে নিয়োগ করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকশনস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের সভাপতি ছিলেন।
বশেমুরবিপ্রবিতে বর্তমানে ৯ টি অনুষদের অধীনে ৩৪ টি বিভাগ রয়েছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স ক্রেডিট সিস্টেম পদ্ধতি চালু রয়েছে। সেমিস্টার পদ্ধতির এ শিক্ষা ব্যবস্থায় কোর্স যথাসময়ে শেষ হয় বিধায় কোনো সেশনজট থাকে না৷ আটটি সেমিস্টারে শিক্ষাপর্ব শেষ হয় ৷ হাতে-কলমে শিক্ষা দানের জন্য এখানে রয়েছে গবেষণাগার বা ল্যাবরেটরি ৷
শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ করে নিতে হয়। ভর্তি পরীক্ষায় এক আসনের বিপরীতে প্রায় ৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোট ছয়টি হল রয়েছে।
যার মধ্যে তিনটি ছেলেদের আর তিনটি মেয়েদের।
ছাত্র হলঃ
ছাত্রী হলঃ